ঢাকায় প্রতিদিন ২৩০ টন মানববর্জ্য মিশছে জলাশয়ে, টয়লেট সম্মেলনে তথ্য

ঢাকায় প্রতিদিন ২৩০ টন মানববর্জ্য মিশছে জলাশয়ে, টয়লেট সম্মেলনে তথ্য

Image: The Associated Press

By Admin User

Reporting from Dhaka - June 29, 2025

নিরাপদ পয়ঃনিষ্কাশনের সংকটে সাড়ে ছয় কোটি মানুষ, ঢাকায় প্রতিদিন খোলা জলাশয়ে ২৩০ টন মানববর্জ্য


বাংলাদেশে এখনো সাড়ে ছয় কোটিরও বেশি মানুষ নিরাপদ পয়ঃনিষ্কাশন সুবিধা থেকে বঞ্চিত। শুধু রাজধানী ঢাকাতেই প্রতিদিন গড়ে ২৩০ টন মানববর্জ্য সরাসরি উন্মুক্ত জলাশয়ে পড়ছে, যা জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশের জন্য মারাত্মক হুমকি তৈরি করছে। এই চিত্র তুলে ধরা হয় ‘ইন্টারন্যাশনাল টয়লেট কনফারেন্স ২০২৫’-এর উদ্বোধনী দিনে মঙ্গলবার।

দুই দিনব্যাপী এই আন্তর্জাতিক সম্মেলনে অংশ নিয়েছেন দেশি-বিদেশি জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ, উন্নয়ন সংস্থার প্রতিনিধি এবং সংশ্লিষ্ট নীতিনির্ধারকরা। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে ইউনিসেফের প্রতিনিধি রানা ফ্লাওয়ার্স বলেন, “খোলা জায়গায় মলত্যাগ শিশুদের স্বাস্থ্য, পুষ্টি এবং মানসিক বিকাশের জন্য বড় প্রতিবন্ধক। তবে বাংলাদেশ এ ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি করেছে, যা অন্যান্য দেশের তুলনায় প্রশংসনীয়।”

তিনি বলেন, “তবে এই অগ্রগতি সহজে হারিয়ে যেতে পারে। যেমন, গত বছরের ফেনীর বন্যা অনেক এলাকায় শিশুদের আবার খোলা জায়গায় মলত্যাগে বাধ্য করেছে। একটি নিরাপদ ও স্বাস্থ্যকর বেড়ে ওঠার পরিবেশ শিশুদের অধিকার, যা নিশ্চিত করতে হলে টেকসই পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা অপরিহার্য।”


বক্তারা বলেন, বর্তমানে দেশে অনুন্নত পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থার কারণে প্রতিবছর প্রায় ৪২০ কোটি ডলারের আর্থিক ক্ষতি হয়, যা ২০১৮ সালের জিডিপির প্রায় ১.৫ শতাংশ। এই খাতে অগ্রগতি অব্যাহত রাখতে বিনিয়োগ বৃদ্ধির পাশাপাশি বেসরকারি খাতকে সম্পৃক্ত করাও জরুরি।

ওয়াটারএইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর হাসিন জাহান বলেন, “এই সম্মেলন কেবলমাত্র একটি আলোচনার জায়গা নয়, বরং এটি পুরনো ও অকার্যকর অভ্যাসগুলোর বিরুদ্ধে একপ্রকার চ্যালেঞ্জ। আমাদের টেকসই ভবিষ্যতের জন্য উন্নত স্যানিটেশন ব্যবস্থাপনা মানবাধিকার ও পরিবেশগত ন্যায়ের অংশ হয়ে উঠতে হবে।”

বিশেষজ্ঞরা আরও বলেন, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনে বাংলাদেশকে বর্তমান গতির তুলনায় অন্তত আট গুণ দ্রুত কাজ করতে হবে। তারা নিরাপদ স্যানিটেশনকে জনস্বাস্থ্য, শিক্ষা, নারী-শিশুর নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির একটি কেন্দ্রীয় উপাদান হিসেবে গুরুত্ব দেওয়ার আহ্বান জানান।

সম্মেলনটি যৌথভাবে আয়োজন করেছে গেটস ফাউন্ডেশন, কিম্বার্লি-ক্লার্ক, নেদারল্যান্ডস দূতাবাস, সুইডেনের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা (Sida) এবং যুক্তরাজ্যের ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট ডিপার্টমেন্ট।

Related Topics:

Share: