বৈষম্যহীন গবেষণাভিত্তিক শিক্ষাব্যবস্থা গড়তে চায় বিএনপি: সালাহ উদ্দিন আহমদ
শিক্ষা ও গবেষণার ক্ষেত্রে কোনো বৈষম্য থাকবে না—এমন একটি আধুনিক, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও গবেষণাভিত্তিক শিক্ষাব্যবস্থা গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন আহমদ। তবে তিনি মনে করেন, এ লক্ষ্যে পৌঁছাতে হলে শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং ছাত্রসংগঠনগুলোকে ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে হবে।
রোববার সকালে রাজধানীর ইনস্টিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স মিলনায়তনে ‘শিক্ষা ও শিক্ষাঙ্গন’ শীর্ষক এক সংলাপে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। এই সংলাপের আয়োজন করে তারুণ্যের রাষ্ট্রচিন্তা নামক প্ল্যাটফর্ম।
সালাহ উদ্দিন আহমদ বলেন, “আমরা এমন শিক্ষাঙ্গন গড়ে তুলতে চাই, যেখানে শিক্ষা ও গবেষণা উভয়ই এগিয়ে যাবে—কোনো ধরনের বৈষম্য বা প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিবন্ধকতা থাকবে না। কিন্তু এ লক্ষ্যে পৌঁছাতে শিক্ষকদের পাশাপাশি ছাত্রছাত্রী ও ছাত্রসংগঠনগুলোর সহযোগিতাও অত্যন্ত প্রয়োজন।”
তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশে যদি উন্নত গবেষণার পরিবেশ তৈরি করা যায়, তাহলে দেশের মেধাবীরা উচ্চশিক্ষা নিতে বিদেশে গেলেও এক সময় ফিরে আসবেন। কিন্তু বর্তমান বাস্তবতায় তারা ফিরে আসেন না। কারণ দেশে তাদের জন্য প্রয়োজনীয় পরিবেশ নেই।”
তুলনামূলক দৃষ্টান্ত হিসেবে চীন ও ভারতের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “চীনের মেধাবীরা বিদেশে গিয়ে জ্ঞান অর্জন করে নিজেদের দেশে ফিরে আসছেন এবং জাতিকে সমৃদ্ধ করছেন। প্রযুক্তিতে তারা বিশ্বসেরা। কিন্তু আমাদের দেশে সেই চর্চা নেই, বরং মেধা পাচার বাড়ছে।”
শিক্ষার ভাষা প্রসঙ্গে সালাহ উদ্দিন আহমদ বলেন, “মাতৃভাষায় মাধ্যমিক পর্যন্ত শিক্ষা বাধ্যতামূলক করা উচিত। শিশুরা মাতৃভাষা ব্যাকরণ ছাড়াই শেখে—তাই তার ভিত্তি মজবুত হয়। বিদেশি ভাষা অবশ্যই শিখতে হবে, কিন্তু সেই ভাষায় যদি ইতিহাস, গণিত বা বিজ্ঞান শেখানো হয়, তবে মেধা বিকাশ বাধাগ্রস্ত হয়। কেবল ইংরেজি মাধ্যমে শিক্ষা দিলেই দেশ এগিয়ে যাবে—এমন ভাবনা সঠিক নয়।”
সংলাপে আরও উপস্থিত ছিলেন—জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল আহসান, প্রধান উপদেষ্টার সিনিয়র সহকারী প্রেস সচিব ফয়েজ আহম্মদ, বিএনপির মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক মওদুদ আলমগীর পাভেল, জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির এবং বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের আহ্বায়ক আবু বাকের মজুমদার।
সংলাপটি সঞ্চালনা করেন অর্পণ আলোক সংঘের প্রতিষ্ঠাতা বীথিকা বিনতে হোসাইন। বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে আগত শিক্ষার্থীরা শিক্ষা ও শিক্ষাঙ্গনসংক্রান্ত নানা প্রশ্ন ও মতামত উপস্থাপন করেন, যেগুলোর উত্তর দেন অতিথিরা। অনুষ্ঠানে সেরা প্রশ্নকারীদের মধ্যে তিনজনকে পুরস্কার দেওয়া হয়।