নির্বাচনের আগে লন্ডনে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক: রোজার আগেই ফেব্রুয়ারিতে ভোট, ইউনূস-তারেকের মধ্যে সিদ্ধান্ত
বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক, যা অনুষ্ঠিত হয়েছে যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডনে। দেশের আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে আলোচনার জন্য মুখোমুখি বসেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। দীর্ঘ আলোচনার পর বৈঠক থেকে সিদ্ধান্ত এসেছে—আগামী রমজানের আগেই, অর্থাৎ ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করা হবে।
কোথায় হয়েছে এই বৈঠক?
এই গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয় লন্ডনের সেন্ট্রাল পার্ক লেন এলাকার বিলাসবহুল দি ডোরচেস্টার হোটেলে। চার দিনের সফরে এই হোটেলেই অবস্থান করছেন প্রফেসর ইউনূস। বাংলাদেশ সময় শুক্রবার দুপুর ২টার দিকে বৈঠকটি শুরু হয় এবং তা চলে প্রায় দুই ঘণ্টা। বিকাল পৌনে ৪টার দিকে বৈঠক শেষে হাস্যোজ্জ্বল মুখে হোটেল ত্যাগ করতে দেখা যায় তারেক রহমানকে। বৈঠকের ইতিবাচক ফলাফলের আভাস মিলেছে তার চেহারায়।
কে ছিলেন এই বৈঠকে?
তারেক রহমানের সঙ্গে ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী এবং হুমায়ূন কবির। তারা নির্ধারিত সময়ের কিছু আগেই হোটেলে পৌঁছান। ড. ইউনূস এবং তারেক রহমানের মধ্যে এই বৈঠককে কেন্দ্র করে হোটেলের নিরাপত্তা ছিল কড়া। বিদেশের মাটিতে হলেও বাংলাদেশের রাজনীতির জন্য এ বৈঠকের গুরুত্ব ছিল যথেষ্ট।
বৈঠকে কী নিয়ে আলোচনা হলো?
বৈঠকে আগামী জাতীয় নির্বাচন নিয়ে গভীর আলোচনা হয়েছে। ভোটের সময়সূচি, নির্বাচন পরিচালনার কাঠামো, জোট গঠনের কৌশল এবং সম্ভাব্য প্রার্থী বাছাই ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। সূত্র বলছে, উভয় পক্ষই নির্বাচনের পূর্বপ্রস্তুতি নিয়ে আন্তরিকভাবে আলোচনা করেছেন এবং নির্বাচনের আগে একটি নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার কাঠামোর সম্ভাবনাও আলোচনায় এসেছে।
রাজনৈতিক অঙ্গনে প্রতিক্রিয়া
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই বৈঠক বাংলাদেশের আগামী নির্বাচনের গতি-প্রকৃতি নির্ধারণে বড় প্রভাব ফেলবে। রোজার আগে নির্বাচন আয়োজনের বিষয়টি একদিকে রাজনৈতিক দলগুলোকে প্রস্তুতির জন্য সীমিত সময় দিচ্ছে, অন্যদিকে সরকার ও প্রশাসনের ওপরও চাপ বাড়াবে নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে আয়োজনের ক্ষেত্রে।
চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের পথে?
এই বৈঠকের মাধ্যমে যে বার্তা এসেছে, তা হলো—সব পক্ষ নির্বাচনমুখী এবং একটি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার প্রতি আগ্রহী। যদিও আনুষ্ঠানিক ঘোষণা এখনো আসেনি, তবে রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনার ঝড় বইছে এই লন্ডন বৈঠক ঘিরে।
সব মিলিয়ে এই বৈঠক শুধু বিএনপি নয়, দেশের সার্বিক রাজনীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তনের আভাস দিচ্ছে। আগামী দিনগুলোতে হয়তো আরও স্পষ্ট হয়ে উঠবে ফেব্রুয়ারির নির্বাচনের ছক এবং তা ঘিরে রাজনৈতিক অঙ্ক।