জাতিসংঘে ইরানের কঠোর হুঁশিয়ারি: যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও আইএইএ-কে দায়ী করল তেহরান, দুই বছর স্থায়ী হতে পারে ইসরাইলের সঙ্গে যুদ্ধ
ইরান সোমবার জাতিসংঘে একটি দৃঢ় বিবৃতি প্রকাশ করে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স এবং আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (আইএইএ)-র মহাপরিচালক রাফায়েল গ্রোসি’র ওপর কঠোর হুমকি জানিয়েছে। তেহরানের প্রতিনিধিদল স্পষ্ট করে দিয়েছে যে, ইরানের নিরীহ বেসামরিক নাগরিক, বিশেষত নারী ও শিশুদের মৃত্যু এবং গুরুত্বপূর্ণ বেসামরিক অবকাঠামোর ধ্বংসের জন্য এই দেশগুলো এবং আইএইএ’র নেতৃত্বশীল কর্মকর্তারা ‘সম্পূর্ণ দায়ভার বহন করবেন।’
ইরানি প্রতিনিধির বক্তব্য অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স এবং ইসরাইল সরকারের পাশাপাশি আইএইএ’র মহাপরিচালক এই ধ্বংসযজ্ঞের জন্য দায়ী। তারা বলেছে, এই আক্রমণগুলো শান্তিপূর্ণ বেসামরিক জনসংখ্যাকে লক্ষ্য করে চালানো হয়েছে, যা আন্তর্জাতিক আইন এবং মানবাধিকারের স্পষ্ট লঙ্ঘন।
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি জাতিসংঘে এ ব্যাপারে বলেন, “নিঃসন্দেহে ইরানের জনগণের ওপর এই নিষ্ঠুর হামলার পেছনে যে সব রাষ্ট্র ও সংস্থা রয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। আমাদের ধৈর্যের পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে।”
একই সময়ে, ইরানের একটি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা সিএনএনকে জানিয়েছেন যে দেশটি ইসরাইলের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি যুদ্ধের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। তাদের অনুমান অনুযায়ী, চলমান উত্তেজনা এবং সংঘাত আগামী দুই বছর পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। এই বিবৃতিটি ইরানের সামরিক ও কূটনৈতিক অবস্থানকে দৃঢ়ভাবে প্রতিফলিত করছে, যা মধ্যপ্রাচ্যের নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে আরও অনিশ্চিত ও জটিল করে তুলেছে।
বিশ্লেষকরা মনে করেন, ইরানের এই কড়া ভাষণ ও হুমকিসূচক বার্তা আন্তর্জাতিক মঞ্চে নিজের অবস্থান দৃঢ় করার পাশাপাশি মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন ও ইসরাইলি প্রভাব কমানোর চেষ্টা। এ ছাড়া, ইরান ঘরোয়া জনগণ ও মিত্রদের মাঝে ঐক্যবদ্ধতার সঙ্কেত দিচ্ছে।
জাতিসংঘে ইরানের এই অবস্থান বিশ্বব্যাপী রাজনৈতিক উত্তেজনা এবং মধ্যপ্রাচ্যের নিরাপত্তা সংক্রান্ত উদ্বেগ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। বিভিন্ন দেশের সরকার ও আন্তর্জাতিক সংগঠন এখন কূটনৈতিক ও সামরিক পদক্ষেপগুলোকে ঘিরে সতর্ক পর্যবেক্ষণে রয়েছে।