ঢাকায় জাপান দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত সাইদা শিনইচির সঙ্গে জামায়াত আমির ড. শফিকুর রহমানের সৌজন্য সাক্ষাৎ, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ও নির্বাচনী পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা
ঢাকায় নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত সাইদা শিনইচি রোববার রাজধানীর মগবাজারে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলটির আমির ড. শফিকুর রহমানের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। আন্তরিক ও হৃদ্যতাপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে দুই দেশের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়াদি নিয়ে গভীর ও বস্তুনিষ্ঠ আলোচনা হয়।
বৈঠকে জামায়াত আমির ড. শফিকুর রহমান তাদের রাজনৈতিক আদর্শ, দলীয় কর্মসূচি এবং গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষায় দলের অবস্থান তুলে ধরেন। বিশেষ করে বাকস্বাধীনতা, ধর্মীয় স্বাধীনতা এবং দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে বিস্তারিত বক্তব্য দেন। তিনি বাংলাদেশের বর্তমান শাসন ব্যবস্থার আওতায় রাজনৈতিক নিপীড়ন ও নির্বাচনী ব্যবস্থার ধ্বংসযজ্ঞের প্রমাণ তুলে ধরে বলেন, “বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার নির্বাচনী ব্যবস্থাকে সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করে দিয়েছে। ২০১৪, ২০১৮ এবং ২০২৪ সালের নির্বাচনের প্রক্রিয়া ছিল ব্যর্থ এবং গ্রহণযোগ্যতা শূন্য। বিশেষ করে ২০১৮ সালের নির্বাচনকে জাপানের সাবেক রাষ্ট্রদূত ‘মধ্যরাতের নির্বাচন’ হিসেবে অভিহিত করেছিলেন, যা আমরা যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে দেখি।”
জাপানের রাষ্ট্রদূত সাইদা শিনইচি বৈঠকে বাংলাদেশের সঙ্গে জাপানের ঐতিহ্যবাহী সম্পর্ক এবং ভবিষ্যতে তা আরও জোরদার করার আকাঙ্ক্ষা ব্যক্ত করেন। তিনি আসন্ন নির্বাচনের বিষয়ে ইতিবাচক মনোভাব প্রকাশ করে বলেন, “আমরা আশা করি বাংলাদেশের নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত হবে। জাপান এই প্রক্রিয়ায় সহযোগিতার জন্য সবসময় প্রস্তুত।”
এছাড়া বৈঠকে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও অন্যান্য অর্থনৈতিক সহযোগিতার প্রসার নিয়ে আলোচনা হয়। পাশাপাশি রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও গণতন্ত্রের উন্নয়নে সহায়তার বিষয়ে মতবিনিময় করা হয়।
বৈঠকে জামায়াতের করামুক্ত নেতা এটিএম আজহারুল ইসলাম, নায়েবে আমির ও সাবেক এমপি ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহের, সাবেক এমপি মাওলানা আনম শামসুল ইসলাম, সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য এবং কেন্দ্রীয় প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য মোবারক হোসাইন এবং জামায়াত আমিরের পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মাহমুদুল হাসান উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকের পর জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার এবং জাপানের রাষ্ট্রদূত সাইদা শিনইচি এক যৌথ প্রেস ব্রিফিংয়ে বৈঠকের মূল বক্তব্য তুলে ধরেন। তারা উভয় পক্ষের মধ্যে চলমান সুসম্পর্ক ও ভবিষ্যৎ সহযোগিতার ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করেন এবং নির্বাচন সংক্রান্ত সহযোগিতায় জাপানের ভূমিকার প্রতি গুরুত্ব আরোপ করেন।