রাজনৈতিক সংস্কারের প্রশ্নে আরও ছাড় দেওয়ার আহ্বান আলী রীয়াজের
রাজনৈতিক সংস্কারের বিষয় নিয়ে আলোচনায় অংশগ্রহণকারী দলগুলোকে আরও উদার ও বাস্তবতাভিত্তিক অবস্থানে আসার আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ। তাঁর মতে, জাতীয় স্বার্থে একটি গ্রহণযোগ্য সমাধানে পৌঁছাতে সব পক্ষেরই আরও কিছুটা ছাড় দেওয়ার মানসিকতা জরুরি।
রোববার বেলা সাড়ে ১১টায় রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমির দোয়েল মাল্টিপারপাস হলে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কমিশনের দ্বিতীয় পর্যায়ের বৈঠকের পঞ্চম দিনে আলোচনার শুরুতেই এই মন্তব্য করেন তিনি।
আলী রীয়াজ বলেন, "একটু ছাড় দেওয়ার জায়গায় আসুন। আপনারা ইতিমধ্যেই আলোচনা টেবিলে এসেছেন, কিন্তু আরেকটু এগোলে আমরা দ্রুত 'জুলাই সনদ' চূড়ান্ত করতে পারব। আলোচনা যেন ফলপ্রসূ হয়, সে লক্ষ্যেই সবাইকে আরও সহযোগিতামূলক ভূমিকা নিতে হবে।"
তিনি বলেন, "আমরা এসেছি একটি কঠিন রাজনৈতিক বাস্তবতার মুখোমুখি হয়ে—যার পেছনে রয়েছে ১৬ বছরের আন্দোলন, অসংখ্য প্রাণের ত্যাগ, গুম, নিখোঁজ হওয়া এবং দমন–পীড়নের ইতিহাস। এসব ঘটনার সঙ্গে আপনারা–আপনাদের দল ও কর্মীরাই–সরাসরি যুক্ত ছিলেন। যাঁদের আত্মত্যাগের কারণে আজ আমরা এই আলোচনায় বসতে পেরেছি। সুতরাং আলোচনার প্রতিটি পর্যায়ে সেই ত্যাগ ও বাস্তবতাকে বিবেচনায় রাখা জরুরি।"
আলী রীয়াজ আরও জানান, নির্বাচন ও বিচারপ্রক্রিয়া দুটোই সমান্তরালভাবে চলবে। তবে এর মধ্যে ‘জুলাই সনদ’ দ্রুততম সময়ে সম্পন্ন করা জরুরি হয়ে পড়েছে। তিনি বলেন, "আমাদের প্রত্যাশা, রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদের অবস্থান কিছুটা নমনীয় করলে এই কাজ অনেক সহজ হয়ে যাবে।"
গত বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত আলোচনায় রাষ্ট্রপতি নির্বাচন, প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ, সংবিধান ও রাষ্ট্রের মূলনীতি এবং নির্বাচনী এলাকা পুনর্নির্ধারণ নিয়ে আলোচনা হলেও কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছানো যায়নি।
আজকের আলোচনায় বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), ইসলামী আন্দোলন, গণ অধিকার পরিষদ, গণসংহতি আন্দোলনসহ প্রায় ৩০টি রাজনৈতিক দল অংশ নেয়।
বৈঠকটি পরিচালনা করেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার। উপস্থিত ছিলেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্য বদিউল আলম মজুমদার, বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, সফর রাজ হোসেন, ড. ইফতেখারুজ্জামান ও মো. আইয়ুব মিয়া।